ক্ষুধা কমায় যে খাবারগুলো
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
হঠাৎ করেই ক্ষুধার অনুভুতি বেড়ে যাওয়া সুখকর বিষয় নয় বেশির ভাগ মানুষের জন্যই । এর ফলে ব্যক্তির মাঝে অপরাধ বোধের সৃষ্টি হতে পারে। যার ফলে যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য আর যারা নিজেদের আদর্শ ওজন বজায় রাখতে চান তাদের জন্যও এই ক্ষুধার অনুভুতি হয়ে ওঠে ক্ষতিকর।
যখন ক্ষুধার অনুভূতি বেড়ে গেলে দুপুরের পর থেকে রাতের খাবারের পর্যন্ত সময়টা অনেক দীর্ঘ মনে শুরু করে। তখন ওজন বেড়ে যেতে পারে এই শঙ্কা ও দেহের আকৃতি নষ্ট হবার কথা সেভাবে মনে থাকে না, চোখের সামনে পাওয়া সব কিছুই তাই খেতে ইচ্ছে করে। তবে সবচেয়ে খারাপ বা ক্ষতিকর ব্যাপার হল যখন সম্পুর্ন একটি চকলেট অথবা ফ্যাটি ধরণের খাবার গুলো তখন খেয়ে ফেলা হয়। তাই এই সময় উচিত নিজের খাবার ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণে আনা এবং ক্ষুধার অনুভূতিকে নিস্তেজ করে ফেলা।
ওজন কমানোর কৃত্তিম উপাদানগুলোর (ট্যাবলেট,সিরাপ) মধ্যে সবারই প্রধান উদ্দেশ্য থাকে ক্ষুধা কমানো। কিন্তু যদি প্রাকৃতিক উপায়ে ক্ষুধা কমানোর চেষ্টা করা যায় সেটাই হবে সবচেয়ে ভালো উপায় । চলুন তাহলে আমরা জেনে নেই এমন কিছু খাবার এর নাম এর তালিকা যেগুলো ক্ষুধার অনুভূতিকে নিস্তেজ করতে পারে।
পানি
পানিতে কোন ক্যালরি নেই এবং পানি পানের মাধ্যমে পেট ভরিয়ে রাখার অনুভূতি সৃষ্টি করা যায়। যার ফলে ক্ষুধা কম লাগে। খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে পানি পান করা ওজন কমার একটি সাধারণ ও সাশ্রয়ী কৌশল। তাই সারাদিনে প্রচুর পানি পান করতে হবে বিশেষ করে খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে। কারন বেশি পানি পান করলে সারাদিনে প্রায় ৩০০ ক্যালরির মতো কম খাবার খেতে সাহায্য করতে পারে।
স্যুপ
ক্ষুধাকে নিস্তেজ করার এবং সঠিক পথে রাখার একটি সুস্বাদু উপায় হচ্ছে স্যুপ পান করা। পেনসিলভেনিয়ার একটি গবেষণায় পাওয়া যায় যে, পুরুষ ও নারীদের মাঝে যারা দুইবেলা স্যুপ পান করেন তারা, একই পরিমান ক্যালরির অন্য খাবার খাওয়া অন্যদের চেয়ে ৫০% বেশি ওজন কম রাখতে পারেন। স্যুপে থাকে প্রচুর পানি এবং কম ক্যালরি। তবে অবশ্যই সেটা সবজির ক্লিয়ার স্যুপ হতে হবে।
ওটমিল
এটি সকালের নাস্তার জন্য খুবই ভালো। এতে রয়েছে খুব ভালো শর্করা যা ধীর গতিতে হজম হয় ফলে ক্ষুধার অনূভুতি কম হয়। তবে এটা তৈরিতে ননফ্যাট দুধ ব্যবহার করতে হবে। সাথে চাইলে ফলের টুকরো যোগ করতে পারেন, দারুচিনি গুঁড়ো বা তিসি বীজ ব্যবহার করতে পারেন।
ব্রকলি, বাধাকপি, শশা ও পালংশাক
ওজন কমানোর জন্য সবুজ সবজি সবচেয়ে উত্তম। এতে থাকে কম ক্যালরি এবং খুব সহজে পেট ভরে যায়। তাই প্রতিবেলা খাবার সময় সবচেয়ে আগে বাধাকপি, শশা, পালংশাক বা ব্রকলির সালাদ খেলে প্রতিবেলার সর্বমোট ক্যালরির পরিমান কমে আসবে।
আপেল
লাল বা সবুজ যেকোনো আপেলই খেতে পারেন। আপেলে অনেক বেশি খাদ্য আঁশ থাকার কারনে এটা অনেকক্ষন পেট ভরে রাখার অনুভূতি দেয়। একটি আপেল খেতে বেশ অনেকক্ষন সময় ভালো করে চিবুতে হয় এর ফলে মস্তিস্কে এমন তথ্য পৌছে যে আপনি কিছু খেয়েছেন তাই অতিরিক্ত খাওয়া কম হয়।
কলা
যদি হঠাৎ করে ক্ষুধা পায় তাহলে ছোট একটি কলা খেয়ে নিলে পরের বেলা পর্যন্ত সহজেই কিছু না খেয়েও থাকা যায়। কলায় রয়েছে উচ্চ আঁশ এবং পটাসিয়াম যার ফলে হজম শাক্তি উন্নত হয় এবং খাবারে পরিতৃপ্তি বৃদ্ধি করে।
ডার্ক চকলেট
এটি ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। ডার্ক চকলেটের মিষ্টি-তেতো স্বাদ অনিয়ন্ত্রত ক্ষুধার অনূভুতিকে কমাতে সাহায্য করে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই পরিমানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে, কম পরিমানে খেতে হবে। কারন যত উপকারীই হোক ডার্ক চকলেটে অনেক ফ্যাট এবং ক্যালরি থাকে।
সবুজ চা
দিনে বেশ কয়েকবার সবুজ চা খেতে পারেন। এটি আপনার ত্বক ও স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করবে। সবুজ চা হরমোনের উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে এর ফলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
খাবারের ঘ্রাণ
শুনতে হাস্যকর শোনালেও ব্যাপারটা বেশ কার্যকরী। খাওয়ার আগে খাবারের ঘ্রাণ নিন। যখন ক্ষুধা অনুভব করবেন তখন সময় নিয়ে কিছু রান্না করুন এবং সবশেষে যখন খাবেন তখন আপনার ক্ষুধা কমে যাবে। বিজ্ঞানীরা দাবি করেন যে, কিছু নির্দিষ্ট খাবারের গন্ধ নাসারন্ধের মাধ্যমে মস্তিস্ককে গেলে সেটা আপনার ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করবে এবং বেশি ক্যালরি গ্রহন করা থেকে বিরত রাখবে। খাবারের গন্ধ নেয়ার পর খাবার ২০-৩০ বার খুব ভালো করে চিবিয়ে খেতে হবে।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফসির